প্রসুন কান্তি রায় ওরফে বরুণ রায়:
১৯২২ইং সনে ১০ই নভেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী গ্রাসে প্রসুন কান্তি রায় জন্ম গ্রহন করেন। তিনি আগরতলার কাছাকাছি কুমিল্লা জেলার মুগড়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং সুনামগঞ্জ কলেজ থেকে আই, এ পাশ করেন। অত:পর সিলেট এম. সি কলেজে বি.এ ক্লাসে ভর্তি হন।
প্রসুন কান্তি রায় ছিলেন করুনাসিন্ধু রায়ের সুযোগ্য পুত্র ও রাজনৈতিক উত্তরসূরী। ১৯৪৭ সালে তিনি ছাত্র ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবীতে সিলেট গোবিন্দ পার্কের এক বিরাট জনসভায় ভাষণ দিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হন। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৫২ সালে তিনি কারাবরণ করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি তাঁর পিতৃ প্রদর্শিত বাম আন্দোলনের কাস্তে ও হাতুরী মার্কা পতাকা কাদেঁ তুলে নেন। তৎকালীন পাক সরকার কর্তৃক কমিউনিষ্ট পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে এ আদশবাদী যুবক দীঘ তেরটি বছর সরকারী হুলিয়া মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ান নওমৌজা খাগাউড়া সহ প্রত্যন্ত গ্রাম গ্রামান্তরের আনাচে কানাচে ।
১৯৫৪ সনে পাকিস্তানের পৃথক নির্বাচেন কাঠামোতে যুক্ত ফ্রন্টের প্রাথী হয়ে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এম.পি.এ) নির্বাচিত হন। পাক আমলে কমরেড বরুনরায় বিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি মুহুতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠন সহ অত্যন্ত নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়ের সঙ্গে বালাট ও মৈলাম সেক্টরে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ ইং সনে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নিবাচনে অংশ গ্রহন করে তিনি পরাজিত হন। ১৯৮৬ ইং সনে দ্বিতীয়বার তিনি একই নির্বাচনী এলাকা থেকে কমিউনিষ্ট পার্টির টিকেটে ঐক্যজোট প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নিবাচিত হন।
জামালগঞ্জ তথা সুনামগঞ্জ জেলার ভার্টী এলাকায় ভাসান পানি আন্দোলনের প্রবক্তা কমরেড বরুনরায়। তাঁর ভাবাদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে ভাসান পানি আন্দোলনের সক্রিয ভূমিকা পালন করছেন। তৎকালীন কমরেড নজির হোসেন, কমরেড অজিত লাল রায়, রথীন্দ্রকুমার তালুকদার ও নিবরশ তালুকদার প্রমুখ। প্রকৃতি প্রদত্ত মাছের ভান্ডার হচ্ছে ভাটী সুনামগঞ্জের বিল-বাদল, হাওর-বাওড় আর নদী-নালা। অথচ লোভী ইজারাদারগনের সীমাহীন লালসা চরিতার্থের জন্য সাধারণ মানুষ তাদের আঙ্গিনার ক্ষুদ্র চুনুপুটি হতেও আজ বঞ্চিত। গরীব দু:খী ও খেটে খাওয়া মানুষের মাছাচ্ছাদিত মুখের গ্রাস কেড়ে নেবার বিরুদ্ধেই ছিল বরুন রায়ের ভাসান পানি আন্দোলন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস